• Home
  • About us
    • Constitution
    • Theme Song
  • Photo Gallery
  • News
    • News
    • Press Relase
    • Press secretary
  • Organization
    • Central Commitee
      • Presidium member
      • Advisory council
      • Vice Chairman
      • Joint secretary
      • Organizational secretary
      • Divisional Secretary
      • Joint oraganizational secretary
      • Joint Divitional Secretary
      • Executive Member
    • Sub-Organization
  • Central Office
    • Central Office
    • Chairman Office
Chairman corner
  • Biograpy
  • Speech of the president
  • Article of president
  • Media conferences
  • 9 years achivement progress
  • Poem
  • Song
Main Menu
  • Home
  • News
  • Citizen chatter
  • Bangladesh constitution
  • Federal Government
  • National News Paper
  • Book of Ershad
  • Video
  • Contact us
Home Article of president

গত ৩ মে ২০০৫ তারিখে দৈনিক জনকণ্ঠের চতুরঙ্গ পাতায় মনজুরে মাওলা সাহেবের লেখা ‘একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির প্রস-াব’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। লেখাটির প্রতি আমার দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে কারণ তার আলোচনার বিষয়বস' ছিলো আমার একটি সংস্কার প্রস-াব। এই নিবন্ধে লেখক সরাসরি আমার নাম উল্লেখ করেননি। তবে আমার প্রস-াবিত নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার ফর্মুলা নিয়ে কিছু সমালোচনা এবং উল্লিখিত প্রস-াবের ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। আবার কিছু বিষয়ে তিনি একমতও হয়েছেন। সকল মহলই অবগত আছে যে, নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কার সম্পর্কিত এই প্রস-াবের উত্থাপক আমি এবং এ ব্যাপারে পত্র-পত্রিকায় বেশ লেখালেখিও হয়েছে।
লেখক তাঁর নিবন্ধে উক্ত প্রস-াব নিয়ে যেসব প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন তা যুক্তিপূর্ণ বটে- তবে ওইসব প্রশ্নের উত্তর আমার প্রস-াবের মধ্যেই রয়ে গেছে। বোঝা গেছে লেখক নির্বাচন পদ্ধতির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রস-াবটি পড়ে দেখেননি। তিনি ২৮.০৪.২০০৫ তারিখের ভোরের কাগজে প্রকাশিত খবর থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিবন্ধটি লিখেছেন। অর্থাৎ এর আগের দিন ২৭.০৪.২০০৫ তারিখে আমি সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন পদ্ধতির যে সংস্কারের প্রস-াব উত্থাপন করেছি- তার ভিত্তিতেই ওই খবরটি প্রকাশিত হয়েছিলো। খবরটি ছিলো সংক্ষিপ্ত, সংস্কারের পূর্ণাঙ্গ ফর্মুলা ওই রিপোর্টের মধ্যে ছিলো না। হয়তো তাই লেখক কিছুটা বিভ্রান- হয়েছেন। তাই তিনি যেসব প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন তার সমাধান দেয়া না হলে একটি সময়োপযোগী সংস্কার প্রস-াব সম্পর্কে পাঠক মনেও বিভ্রানি- থেকে যাবে।
লেখক তার নিবন্ধের শুরুতেই প্রশ্ন রেখেছেন যে, ‘বেশিরভাগ ভোটদাতার সমর্থন না পাওয়া সত্ত্বেও কোনো দল যদি সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়, তাহলে ওই সরকার গঠনে দেশের ভোটদাতাদের সঠিক মতামত প্রতিফলিত হয়েছে ও গণতান্ত্রিক নীতি প্রতিপালিত হয়েছে- এমন কথা বলা যাবে কি?’ এই প্রশ্নের ধরন থেকে প্রতীয়মান হয় যে, লেখকও হয়তো এর উত্তরে বলতে চান যে- ‘না’। কিন' পরবর্তীতে তিনি যে আলোচনা করেছেন তাতে মূলত কী বলতে চাওয়া হয়েছে তা কিছুটা অস্পষ্ট। যাক, সে প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। এই প্রশ্ন সম্পর্কে বলতে চাই যে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে গণতন্ত্রের সংজ্ঞাতেই বলা আছে- গণতন্ত্র মানে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন। অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠের রায় পাওয়া প্রতিনিধি বা প্রতিনিধিবর্গ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। গণতন্ত্রের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে বলা হয়েছে- সংখ্যাগরিষ্ঠরা কখনো কখনো সংখ্যালঘুদের -ধর্মীয় বা জাতি প্রশ্নে নয়) উপর জুলুমমুখী হয়ে উঠতে পারে। সংখ্যাগরিষ্ঠদের এ ধরনের মানসিকতা গণতান্ত্রিক আদর্শকে ব্যাহত করে। তবে আমরা গত ১৫ বছর ধরে দেখছি উল্টো চিত্র। সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন তো প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেই না, উপরন' সংখ্যালঘিষ্ঠের দুঃশাসন সংখ্যাগরিষ্ঠদের উপর পাথর-চাপার মতো চেপে বসেছে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি প্রদত্ত ভোটের মাত্র ৩০ দশমিক ৮১ ভাগ ভোট পেয়ে আসন আধিক্যের কারণে জামায়াতের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে। শেষ পর্যন- সে সমর্থনও সরকারের পক্ষে থাকেনি। এমনকি ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোটের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিনিধিবর্গ সংসদ থেকে পদত্যাগ করার পরও সংখ্যালঘিষ্ঠ ভোটারের সমর্থিত সরকার গণতন্ত্রের নামে দেশ পরিচালনা করেছে। এর পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে এবং ৫ বছর দেশ পরিচালনা করেছে, তারাও সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারের রায় পাওয়া সরকার ছিলো না। এই সরকার ভোট পেয়েছিলো ৩৭.৪৪ শতাংশ। তারা সরকার গঠন করেছে আমার সমর্থন নিয়ে। সংসদীয় সরকার ব্যবস'ায় শতাংশের হিসাবে ভোট কম পেলেও আসন আধিক্যের কারণে সরকার গঠন করতে সক্ষম হতে পারে। তবে গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় এটা গ্রহণযোগ্য মনে হয় না। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস'ার নির্বাচনে এই অবস'া সৃষ্টির অবকাশ নেই। সংসদীয় সরকার ব্যবস'ায় সংখ্যালঘিষ্ঠ রায় নিয়েও সরকার গঠিত হতে পারে এবং হচ্ছেও। আমার  প্রস-াবনায় বলেছি- সংসদীয় সরকার পদ্ধতিতে প্রচলিত ব্যবস'াই যে সর্বোত্তম- তা মেনে নিতে পারি না। আর এই ব্যবস'া কোনো ধর্মীয় বিধান নয় যে, এটা পরিবর্তন বা সংস্কার করা যাবে না। আমি যে সব কারণে নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারের প্রস-াব দিয়েছি তার মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে- রাষ্ট্র ক্ষমতায় সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন ব্যবস'া নিশ্চিত করা। আমাদের এখন আধুনিক চিন-া-চেতনা নিয়ে অগ্রসর হওয়া উচিত। এটা মহাভারতের যুগ নয় যে- যারা পাশা খেলে জিতবে তারাই রাজ্য শাসন করবে, আর যারা হেরে যাবে তারা বনবাসে যাবে!
আমার নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারের ফর্মুলায় বলেছি- সংসদীয় সরকার ব্যবস'ায় রাষ্ট্র পরিচালনার পদ্ধতি যখন দলীয় শাসন ব্যবস'া- সে ক্ষেত্রে নির্বাচনও শুধু দলের ভিত্তিতে হতে পারে। অর্থাৎ ভোটারগণ দলকে ভোট দেবেন- সরাসরি প্রার্থীকে নয়। প্রত্যেক দল প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসনের সদস্য পাবে। এটাই হচ্ছে প্রস-াবনার মূল কথা। বিস-ারিত ব্যাখ্যা প্রস-াবনায় রয়েছে। প্রস-াবের সব কিছু উল্লেখ করা এখানে সম্ভব নয়- জনকণ্ঠ হয়তো ততোখানি জায়গা দিতে পারবে না। লেখক যেসব ক্ষেত্রে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন, প্রস-াবনা থেকেই তার জবাব দেয়ার চেষ্টা করবো। এ প্রসঙ্গে লিখতে গিয়ে লেখক কিছুটা অপ্রাসঙ্গিকভাবে বলেছেন যে, ‘এক প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, যিনি নব্বই দশকের গোড়ার দিকে গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন, পরে অসাধুতার কারণে দণ্ডিত হয়েছিলেন ও কারাবাস করতে বাধ্য হয়েছিলেন, নির্বাচন ব্যবস'া সংস্কার করার প্রস-াব করেছেন।’ এই অপ্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ নিয়েও দু’চার কথা না লিখে পারছি না। আমি ক্ষমতা ছেড়ে দেবার পর দেশ ও জাতি কতখানি লাভবান হয়েছে সে হিসাব এখন জনগণই করছে। গত ১৫ বছরে দেশের হাল কী হয়েছে- তা তো দেশের মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। ঢাকাকেন্দ্রিক ওই আন্দোলনে যদি কোনো সরকারের ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হতে হয়, তাহলে ’৯০ পরবর্তী তিন সরকারেরই ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার মতো উপযুক্ত পরিবেশ বহুবার সৃষ্টি হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে আন্দোলন হয়েছে তাতে- জনতার মঞ্চ বসেনি, রাজকর্মচারীরা রাজপথে নেমে আসেননি। বর্তমান গণতান্ত্রিক শাসনামলের দেশের দুরবস'ার কথা আর নাইবা বললাম এখানে। তারপর কারাবাস মানেই যদি অসাধুতার কারণ হয়, তাহলে দেশের যেসব বরেণ্য রাজনৈতিক নেতা কারাবাস করেছেন- সেটাকে কোন কারণ বলে ধরে নিতে হবে? আমার শাসনামল তো দুর্নীতির চ্যাম্পিয়ন খেতাবে ভূষিত হয়নি। বর্তমান গণতান্ত্রিক আমলে দেশ যাদের কারণে দুর্নীতিতে বিশ্বসেরা হয়েছে- তারা কারা? সাধারণ মানুষ? আমলা- না রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব যাদের? ৯ বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করে যখন ’৯০ সালে ক্ষমতা ছেড়ে দিলাম তখন উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশের পিছনে ছিলো মালয়েশিয়া। তারপর ১৫ বছরে সেই মালয়েশিয়া কোথায় এগিয়ে গেছে আর বাংলাদেশ কতো পেছনে চলে গেছে- সে হিসাব করলে কি মাথা হেঁট হয়ে আসে না? কেনো এমন হলো- কারণ মালয়েশিয়া ধরে রেখেছে মাহাথির মোহাম্মদের মতো নেতৃত্বকে। কিন' বাংলাদেশে আমি ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর আমার বিকল্প নেতৃত্ব আর প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যা-ই হোক মূল প্রসঙ্গ নির্বাচন পদ্ধতি- সেখানেই ফিরে আসি।
আমার প্রস-াব নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে লেখক বুঝাতে চেয়েছেন যে, প্রস-াব অনুসারে ৫০.৫ শতাংশের অধিক ভোট পেলেই কেবল কোনো দল সরকার গঠন করতে পারবে। তিনি আরো বলেছেন যে, ‘গত কয়েকটি সাধারণ নির্বাচনে এ পর্যন- কোনো রাজনৈতিক দলই মোট ভোটের ৫০ শতাংশ ভোট পায়নি। এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে এবং এমনটি থাকাই স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত। তাহলে কোনো দলের পক্ষেই সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে প্রদত্ত মোট ভোটের শতাংশ হিসাবে সর্বাধিক ভোট যে দলটি পাবে সে দলটিকে সরকার গঠনের জন্য অন্য দলকে সঙ্গে নিতে হবে।’ লেখকের এই মন-ব্য সম্পর্কে বলতে চাই- যদি সেটাই করতে হয় তাহলে অসুবিধাটা কোথায়। যদি একটি দল ৪০ শতাংশ ভোট পেয়ে ১২০টি আসন লাভ করে সরকার গঠনের জন্য অপর এক বা একাধিক দলকে সাথে নিয়ে ন্যূনতম ১৫১ আসনের কোয়ালিশন গঠন করে, তাহলে সেখানে তো সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনই নিশ্চিত হবে। আমার প্রস-াব অনুসারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ বা কোয়ালিশন- যাই গঠিত হোক না কেনো, সংখ্যালঘিষ্ঠ রায়ের সরকার অবশ্যই গঠিত হবে না। নির্বাচনে কোনো দল ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাবে না বা কখনো পায়নি- তা তো ঠিক নয়। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৭৩ দশমিক ২০ শতাংশ ভোট পেয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে যেমন গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত বা স'ায়িত্ব লাভ করেনি- আবার ’৯১-এর নির্বাচনে বিএনপি জামায়াতের সমর্থন নিয়ে এবং ’৯৬-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করায় রাষ্ট্র চালাতে কোনো অসুবিধা হয়নি। বরং একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারের চেয়ে কোয়ালিশনের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠিত হওয়া আমাদের মতো দেশের জন্য অধিক মঙ্গলজনক। এতে বড় দলের স্বৈরাচারী বা স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের সুযোগ থাকে না। ছোট বা অন্য দলের প্রতি সমীহ করে চলার মানসিকতা গড়ে ওঠে- যা গণতন্ত্রের অন্যতম শর্ত।
লেখক তার লেখায় আর যেসব প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন সেগুলো হচ্ছে: এক. যদি ভোটদাতারা কোনো প্রার্থীকে ভোট না দিয়ে শুধু রাজনৈতিক দলকে ভোট দেন, তাহলে নির্বাচনে কোনো প্রার্থী থাকবেন কি? দুই. যদি কোনো প্রার্থী না থাকেন তাহলে ভিন্ন ভিন্ন এলাকা থাকবে কি? তিন. ধরা যাক থাকবে না। এমনি পরিসি'তিতে বিজয়ী রাজনৈতিক দল যে সব জায়গায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পাবে, সে সব জায়গার মধ্য থেকে কোনো একটি বিশেষ জায়গার কোনো ব্যক্তিকে যদি সংসদ সদস্য মনোনীত না করে, তাহলে সংসদে ওই বিশেষ জায়গায় প্রতিনিধিত্ব কে করবেন? চার. যদি জনগণের অপছন্দের কোনো লোককে সংসদ সদস্য মনোনীত করা হয়, তাহলে যে সমস্যা দেখা দেবে তা কি করে সমাধান করা হবে? পাঁচ. যদি কেউ নির্দলীয়ভাবে প্রার্থী হতে চান, তার কী হবে? বলা হয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির প্রস-াবে নির্দলীয় প্রার্থীদের বিষয়টি একেবারেই বিবেচনা করা হয়নি’। ছয়. তত্ত্বাবধায়ক সরকারে যদি আগের সরকারের মনোনীত ব্যক্তিদের প্রাধান্যই থাকে, তাহলে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার কেনো?
আমি আগেই বলেছি লেখক যদি আমার প্রস-াব পুরোপুরি দেখতেন তাহলে তিনি এমন প্রশ্ন উত্থাপন করতেন না। আমার প্রস-াবনায় বলেছি, এক. প্রত্যেক দল নির্বাচনের আগে তাদের প্রার্থী প্যানেল তৈরি করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেবে। রাজনৈতিক দলগুলো নিজস্ব ইশতেহার ঘোষণার মতো প্রার্থী তালিকা তৈরি করে দেশবাসীর সামনে উপস'াপন করবে। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সাধ্য অনুসারে প্রার্থী প্যানেল করবে। দুই. দেশে বিদ্যমান তিনশ’ আসনেই দলগুলো নিজস্ব প্রতীক নিয়ে নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তালিকার সাথে প্রত্যেক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা থাকবে। একই প্রার্থী একাধিক তালিকায় -মনোনয়নপত্রসহ) থাকলে তার প্রার্থিতা বাতিল হবে। তিন. প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে দলটি কতোটি আসন লাভ করবে এবং কোনো নির্বাচনী এলাকায় ওই দলটির সদস্য প্রতিনিধিত্ব করবেন। সে ক্ষেত্রে দলের প্রাপ্ত ভোটাধিক্য প্রথম বিবেচনা হিসেবে গণ্য করা হবে। দল নির্ধারণ করবে তার কোন প্রার্থী কোন এলাকার প্রতিনিধিত্ব করবে। চার. জনগণ দলের প্রতি ম্যান্ডেট দেবে, দল নির্ধারণ করবে কাকে প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হবে। যেমন বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতিতে ভোটারগণ শুধু একজন সংসদ সদস্য প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে। রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রী নির্বাচনে ভোটারদের কোনো হাত নেই। দেখা গেছে যিনি নির্বাচনে জামানত হারিয়েছেন- দল তাকেই আবার মন্ত্রী নিয়োগ করেছে। এসব নিয়ে জনগণ বা ভোটারগণ মাথা ঘামাতে যায় না। তারা তাদের পছন্দের দলের মনোনীত একজন প্রার্থীকে নির্বাচিত করেই সকল দায়িত্ব দলের উপর ন্যস- করে। দল যাকে মনোনীত করে, ভোটারের কাছে তিনি পছন্দের নাও হতে পারেন- হয়তো দলের কারণেই তাদের ভোট দেয়া হয়। এরকম ক্ষেত্রে দেখা যায়- কোনো দলের একজন সংসদ সদস্য পরবর্তীতে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হয়তো জামানত হারিয়ে বসেন। অর্থাৎ ব্যবস'া যখন দলীয় শাসন, তখন দলের প্রতি ম্যান্ডেট দেয়াটাই বড় কথা। আমার প্রস-াবের ফর্মুলার মতোই তো বর্তমানে মহিলা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হচ্ছেন বা হবেন। এখানে দলের মনোনীত মহিলা প্রার্থী যদি সাধারণ ভোটারদের অপছন্দের প্রার্থী হয়ও, তাতে তো কোনো সমস্যা দেখা দেয় না। পাঁচ. নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কার প্রস-াবে নির্দলীয় প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথাও বলা হয়েছে। আমার প্রস-াবে বলেছি, সংসদীয় আসনের ভিত্তিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কারণ অনেকে স্বতন্ত্রভাবেও নির্বাচন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে উক্ত আসনের মোট প্রদত্ত ভোটের ৫০ শতাংশের চেয়ে অন-ত এক ভোট বেশি পেলেই স্বতন্ত্র সদস্য নির্বাচিত হতে পারবেন। এই প্রস-াবের কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ের প্রতিফলন ঘটানো। ছয়. তত্ত্বাবধায়ক প্রশ্নে আমার প্রস-াবে বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস'া রাজনীতিকদের জন্য লজ্জা ও অপমানের বিষয়। এই ব্যবস'া বাতিল করে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলের আসন সংখ্যার আনুপাতিক হারে প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি অন-র্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। এই সরকার শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। অন-র্বর্তী সরকারের কোনো প্রতিনিধি নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো হস-ক্ষেপ করতে পারবেন না। নির্বাচন পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব থাকবে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের হাতে। বিষয়টি আরো কিছুটা স্পষ্ট করার জন্য আমার প্রস-াবনায় এক নজরে নির্বাচন পদ্ধতি সম্পর্কে যে সংক্ষিপ্ত ধারণা দিয়েছি- তা এখানে উল্লেখ করতে চাই।
১. জাতীয় পরিষদের আসন সংখ্যা হবে ৩০০। এ প্রসঙ্গে একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই যে, জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আমি প্রাদেশিক ব্যবস'া প্রবর্তনের প্রস-াবটি উত্থাপন করেছি। আমার প্রস-াব অনুসারে দেশে জাতীয় পরিষদ এবং প্রাদেশিক পরিষদ থাকবে। সেহেতু জাতীয় পরিষদের আসন সংখ্যা ৩০০ থাকলেই যথার্থ হবে।  ২.  প্রত্যেক রাজনৈতিক দল সামর্থ্য অনুসারে প্রার্থী মনোনীত করে নির্বাচন কমিশনে তালিকা পেশ করবে। ৩. তালিকার সাথে প্রত্যেক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা থাকবে। ৪. একই প্রার্থী একাধিক দলের তালিকায় থাকলে তার প্রার্থিতা বাতিল হবে। ৫. প্রত্যেক দল নির্ধারিত কোটা অনুসারে প্রার্থী তালিকা তৈরি করবে। ৬. প্রার্থী তালিকার কোটা হবে (ক) সাধারণ ৫০%, (খ) মহিলা ৩০%, (গ) সংখ্যালঘু ১০%, (ঘ) পেশাজীবী ১০%। ৭. সাধারণ প্রার্থী কোটায় যে কোনো প্রার্থী থাকতে পারবেন। পেশাজীবী কোটায় থাকবেন শিক্ষক-আইনজীবী-বুদ্ধিজীবী-সাংবাদিক-শিল্পপতি-ব্যবসায়ী-শ্রমিক নেতৃত্ব।  ৮. প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে কোন দল কোন কোটায় কত আসন লাভ করবে। যে দল সর্বাধিক ভোট পাবে, সে দলই ভগ্নাংশের সুযোগ লাভ করবে। অর্থাৎ কোনো দল কাস্টিং ভোটের ১ শতাংশ ভোট লাভ করলে ৩টি আসন পাবে। ১ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ পর্যন- ভোট পেলে ৪টি আসন লাভ করবে। অবশিষ্ট ভগ্নাংশের যোগফলের সুবিধা সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত দল ভোগ করবে। ৯. নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে কোন আসনে কোন দলের প্রার্থী প্রতিনিধিত্ব করবেন। সে ক্ষেত্রে দলের প্রাপ্ত ভোটাধিক্য প্রথম বিবেচনা হিসেবে গণ্য করা হবে।  ১০. কোনো দলের প্রতিনিধি মৃত্যুবরণ কিংবা পদত্যাগ করলে অথবা দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে সংসদ প্রতিনিধি পদ হারালে ওই আসনে কোনো উপ-নির্বাচন হবে না। সংশ্লিষ্ট দল তাদের প্রার্থী তালিকা থেকে নতুন প্রতিনিধির মনোনয়ন দেবে। নির্বাচন কমিশন তাকেই সংসদ প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। ১১. স'ানীয় সরকার নির্বাচন কোনো দলীয় ভিত্তিতে হবে না। যেমন- ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। এখানে সরাসরি প্রার্থীরাই নির্বাচন করবেন।  ১২. যে কোনো নির্বাচনে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন নির্বাহী ক্ষমতার অধিকার বলে দায়িত্ব পালন করবে এবং নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান- চূড়ান- বলে বিবেচিত হবে।
আমি নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারের যে ফমুর্লা উত্থাপন করেছি, এই ফর্মুলায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তার মধ্যে রয়েছে বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, গ্রিস, ফিনল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড এবং ইসরাইল। প্যালেস্টাইনের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনও এই পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমার প্রস-াবের সাথে এসব দেশের নির্বাচন পদ্ধতির হুবহু মিল থাকতে নাও পারে, তবে দলকে ভোট দিয়ে আনুপাতিক হারে সংসদ সদস্য নির্বাচনের বিধান রয়েছে। আমাদের উপমহাদেশে এই পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস'া নেই। তবে এটা প্রবর্তন করা হলে আরো অনেক দেশ অনুসরণ করবে বলে আমার বিশ্বাস। কারণ নির্বাচনী সমস্যা উপমহাদেশের সব দেশেই কম-বেশি রয়েছে। আমি নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারের যে ফর্মুলা দিয়েছি তা ১৫ পৃষ্ঠার একটি পুসি-কায় প্রকাশিত হয়েছে। পুসি-কাটি যদি লেখক সংগ্রহ করে পড়তে পারেন, তাহলে এ ব্যাপারে তার ধারণা স্পষ্ট হবে। তবুও তাকে ধন্যবাদ যে তিনি বিষয়টি চিন-া করেছেন। এটাই প্রস-াবনার একটি ইতিবাচক দিক। তাছাড়া তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিয়োগ সম্পর্কে আমার প্রস-াব এবং ডিসিদের রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ প্রদানের ব্যবস'াটি বাতিল করার প্রস-াবও সমর্থন করেছেন। আশা করি এই নিবন্ধের মাধ্যমে নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কার সম্পর্কিত প্রশ্নের সমাধান হয়েছে।

 


created by CreativeIT lTD.